বড় মানুষরা বড় ব বিষয় নিয়ে চিন্তা করে
, ছোট মাথার চিন্তা গুলোও ভেবে দেখা দরকার তাই সে যত অপরিপক্ক চিন্তাই হোক না কেন|
এক.
গত দুই বছর
আগে আমি একটা সরকারী অফিসে
গিয়েছিলাম আমার বন্ধুর সাথে দেখা
করতে , তখন রমজান মাস
, দোস্তের অফিসিঅল কাজের চাপ কম
, সিরি বেয়ে বেয়ে তার
রুমে যাব এমন সময় দেখি
অফিসের সব ফ্লোরে অনেক
লোক মিলে কেরাম খেলছে|তখন
বেলা ১১ টা বাজে , সভাবতই সব অফিস এই সময় কর্মবেস্ত থাকবে| আমি ভাবলাম এটা
মনে হয় বিশেষ একটা
দিন তাই তাদের কোনো
কাজ নেই, কিন্ত আমার
কৌতুহলী মন কি
আর করা দোস্তের কাছে জানলাম
এটা পুরা রমজান মাস
জুড়েই এই আসর চলবে , আরো
অবাক হলাম কোনো কোনো
বস তাদের পাশ দিয়েই
চলে যাস্ছে সে বেপারে
তাদের কোনো তওয়াক্কাই নেই
. আমি দোস্তকে বললাম তোদের কি
আরাম, চাকরি যাওয়ার ভয়
নেই, বেতনের কোনো চিন্তা
নেই, মাস শেষ হলেই
তোরা টাকা পাবি, আর
আমাদের উপরের সব বিষয়েই
চিন্তা করতে হয়. আমি
নিজের মনে মনে ভাবলাম
এই অফিসের সবাই অনেক
বড় বড় পাবলিক বিশবিদ্যালয়
থেকে আসছে ,নেংটি পরা গরিব কৃষকের
ফসল বেচা টাকার কর
থেকে সরকার তাদের পড়িয়েছে,
যারা বেসরকারী বিশবিদ্যালয় পড়সে তাদের কথা
আমি বলি না কারণ
তাদের বাপের অনেক আছে
. যাহোক এদের সবার
মেধা অনেক অনেক বেশি কিন্তু তারা যে
পরিমান কর্মঘন্টা হেলায় নষ্ট করছে
তার হিসাব কি তারা
অনুধাবন করতে পারে ? তারা
কি তাদের মেধার সঠিক
ব্যবহার করতে পারছে ? তারা
যে দিনে দিনে মেধাহীনতার
দিকে যাচ্ছে ? তারা যে নেংটি পরা গরিব কৃষকের
কাছে ঋণী তারা কি
তা বুঝে ? অসংখ দিন
বাসের ভাড়া হাফ দিয়েছে
তাই বাসের হেল্পার থেকে
শুরু করে বাসের
মালিকের কাছেও ঋণী,
তারা কি তা বুঝে
?
যারা বেসরকারী জব
করে তাদের দায়ীত্ব কিছুটা কম
, কেননা তারা বা তাদের
সরাসরি উত্পাদনের সাথে জড়িত থাকতে হয়
তারা অন্যের ট্যাক্স এর
টাকায় চলে না, ট্যাক্স দিতে
হয় তাদের, বিনিময়ে সরকারী
মানুষদের কাছ থেকে সেবা
পেতে চায় , শুনেছি হয়রানি
ছাড়া অথবা ঘুষ ছাড়া
সেবা পাওয়া দুরহ, দেশের
কিছু সেক্টর এ কাজের
চাপ অনেক বেশি যেমন
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস ও সাস্থ্য
খাত, তাদের
সার্ভিস টাইম ১২ ঘন্টার
পরিবর্তে কমিয়ে ১০ ঘন্টা
করা উচিত| তাদের ভাতা
বাড়ানো উচিত অপরদিকে অবৈধ লেনদেনের
বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া দরকার|
গ্রামে ভালো ডাক্তার দের
থাকার জন্য ভালো ব্যবস্থা
থাকা উচিত; তা না হলে
কোনভাবেই গ্রামে ভালো ডাক্তার
থাকবে না|
দুই.
দেশে যেন
সরকারী কর্মচারী অথবা অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী
আর তাদের পরিবারবর্গ থাকবেন
| অন্যরা না থাকলে তাদের
জন্য ভালো হয়; অন্য
মানুষ তাদের কাছে উপদ্রব মনে হয়
; এতটুকু ঢাকা শহরে তাদের
আবাসিক কলোনিগুলো বিশাল জায়গা নিয়ে
আছে ,সেখান দিয়ে যদি
কোনো লোক যায় তাকে
বলতে হয় কোথায় যাব
? কেন যাব ? যার কাছে
যাব সে কি হয়
? সে কারণে ওই সব
এলাকায় কোনো প্রয়োজন থাকলেও
সাধারণ মানুষ
যেতে বিরক্ত বোধ করে|
আর একটা ব্রাম্মন
শ্রেণী আছে তা হলো দেশের
সশস্র বাহিনী| তারা চাকুরিতে যখন থাকবেন তখন
তাদের জন্য বিশাল ক্যান্টনমেন্ট
আছে আরো আছে
তাদের ছেলে মেয়েদের জন্য
স্কুল ,মসজিদ খেলার মাঠ
,ফাস্ট ফুড এর দোকান
, স্টেডিয়াম , সুইমিং পুল , এমনকি ইউনিভার্সিটি, সেখানে সাধারণ মানুষের
বাচ্চারা চান্স পেলেও তাদের
অনেক সময় নিয়া হয়
না , সেখানে হরতাল সহ অপরাজনীতির কোনো প্রভাব
পড়ে না পড়বেও না , ফলে ওখানকার বাচ্চারা ভালো কিছু করবেই , তাহলে কি সাধারণ মানুষের বাচ্চাদের ভালো কিছু করার দরকার নাই অথবা অধিকার নাই ?
এবার বলা যাক
তাদের অবসর কালীন জীবন
যাপনের জন্য DOHS| ঢাকা
শহর পুরাটা একটা DOHS
হয়ে যাছে , মিরপুর DOHS, বনানী
DOHS, বারিধারা DOHS, মহাখালী DOHS তাইলে
ঢাকা শহরের বাদ থাকলো
কোথায় ? এখনো বলা যাচ্ছে যে ঢাকা
বাংলাদেশের রাজধানী|কিছুকাল কাল পরে বলতে হবে ঢাকা বাংলাদেশের DOHS| শুনেছি নারায়ানগঞ্জ ও
নাকি DOHS হয়ে যাবে.
তিন.
প্রতিদিন নিউস পেপার খুললেই দেখি
কয়েকজন ধর্ষিত হয়েছেন, এটা ছাড়া যেন
নিউস পেপার প্রকাশ
করা যায় না , আমার
মনে হয় সারা দেশের
মানুষ বিরক্ত এই সংবাদ
প্রকাশকের উপর কেননা তারা এই খবর
দেখতে চায় যে ধর্ষকের
নির্মম সাজা হয়েছে | বাচ্চা মেয়ে
থেকে বুড়ি কেউ যেন
বাদ পরছে না , বাচ্চা
মেয়েকে আদরের চলে কোনো
পুরুষ ধর্ষণ করতে পারে
এটা আমার ভাবতে ঘৃনা হয়
| দেশের
নীতি নির্ধারকরা দেশের পর্যটন শিল্পের
কথা বলেন এবং ভাবেন
, সুজলা সুফলা এই দেশর
সৌন্দর্য দেখতে গেলেও
নারী ধর্ষিত হয় , ছিনতাই
হয় , স্কুল এ গেলে
বাচ্চা মেয়ে ধর্ষিত হয়
, মাদ্রাসায় গেলে মেয়ে
ধর্ষিত হয়, আত্মিয়ের বাসায় গেলে ধর্ষিত
হয়, তাহলে তারা যাবে
কোথায় ? মনে হচ্ছে সমাজে
নারী না থাকলে পরুষরা
এগোলো করার সুযোগ পাবে
না, আসলে সমস্যা টা
ওখানে নয় , সমস্যা পুরুষের
বেড়ে ওঠায়, তার পরিবার
তাকে সঠিক শিক্ষা দিতে পারে
নি; সে সমাজের খারাপ
কাজ করলেও তার
সমুচিত সাজা হইনি, যে
ধর্ষক তাকে বলতে চাই
যে তোমার জন্ম হইছে
ওই নারী জাতির কোনো
একজনের সবচেয়ে
নিকৃষ্ট জায়গা দিয়ে | তোমার
মত কুলাঙ্গার যে তার
গর্ভে এটা যদি সে
জানতে পারত তাহলে
তোমাকে সে কোনভাবেই ধারণ
করত না |
আজকে দেখলাম একজন
পুলিশ আইনের মানুষ হয়েও
আর এক মেয়ে পুলিশ
কে ধর্ষণ করেছে , এখন
পর্যন্ত ধর্ষিতা কোনো মেয়ের পক্ষে
এসে আমাদের পুলিশ বা
আমাদের সরকার কোনো আশানুরূপ
পদক্ষেপ নিতে পেরেছে ?, এ
বিষয়ে দেশে কি কোনো
বিচার হবে না ?, অথবা
আর কত মেয়ে ধর্ষিত
হলে আমাদের সামাজিক আন্দোলন
গড়ে উঠবে ?
যারা ধর্ষণ করছে
তাদের নির্মম বিচার হওয়া
জরুরি , সাথে সাথে তার
বাবা মা কেও সমাজ
থেকে বয়কট করা উচিত
কেননা তারা তাদের ছেলেকে
নৈতিক শিক্ষা দিতে পারে
নি.
চার.
আমাদের দেশের মাননীয়
প্রধান মন্ত্রী ডিজিটাল
বাংলাদেশ শব্দটি জানেন এবং দেশের
ছোট নেংটা বাচ্চাকেও জানাতে
ব্যবস্থা নিয়েছেন, সারা পৃথিবীর মানুষ
যখন এই ডিজিটাল মাধ্যমে
তার মনের কথা প্রকাশ
করতে পারতেছে, সারা বিশ্বের মানুষ
যখন নতুন নতুন বিষয়
নিয়ে ভাবছে আমরা তখন
ওই ধর্মান্ধ বাক্তিদের ভয়ে ব্লগার দের মরে
যেতে দেখেও ধর্মান্ধ বাক্তিদের
নিষ্ঠুর আচরণের বিচার চাইতে
ভয় পাচ্ছি| যারা ব্লগ বা
ব্লগার এর কোনটাই বুঝে
না কিন্তু তারা ব্লগার মানে নাস্তিক
এই মিথ্যা কথাটা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে এবং আমরা
তাদের ভুল গুলোও ধরিয়ে
দিতে ভয় পাই তাহলে সেই জাতির
কি অগ্রগতি হওয়া উচিত ?
পাচ.
গত কয়েক বসর
আগে আমাদের দেশের বিচার
বিভাগ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ,এখন কমেছে কি
না বলা মুশকিল ,কারণ
অন্য বিভাগ গুলো ও
তো আর পিছিয়ে থাকবে
না , তাদের ও তো
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খায়েশ থাকতে
পারে !!, আমার ছোট মাথায়
আসে না যে নিম্ন
আদালতে যার দন্ড হলো
সে উচ্চ আদালতে গিয়ে
জামিন পেয়ে যায় কিভাবে
? একসময় সে
জনদরদী নেতাও বনে যায়,
তাহলে নিম্ন আদালতে বসে
যিনি বিচার
করেন উনি কি নকল
করে বিচারক হয়েছেন ? না
কি কম দামী বই
পড়েছেন যাতে ভুল লেখা
ছিল ? তাদের কে যারা
নিযোগ দিয়েছেন তারা কি বাড়তি
সুবিধা নিতে নিযোগ দিয়েছেন ? ছোট
বেলা থেকে একটা কথা
শুনে এসেছি বিচার/ আইন তার
নিজস্য গতিতে চলে ....., আসলে
কি তাই? আসলে তাকে
চালানোর জন্য কিছু ভালো
মানুষের উপর দায়ত্ব দিয়া
হয় | যারা
চালাবে তারা যদি আইন
না জানে না পড়ে
অথবা সংখাধিক বড় মাথার কোনো চাপে তার নিজের
কর্তব্য পালন না করে
; তারা তো নিজের সাথে
নিজেই বেইমানি করছে| দেশটা কোনো
মানুষের একার নয় , যারা
বিচারক এবং যারা সুবিচার
প্রত্যাশী ...সবার | আমাদের দেশের
কোনো সাধারণ মানুষও আদালত
অবমাননা করলে তাকে কাঠগড়ায়
দাড়িয়ে থাকতে হয় ঠিক
যতক্ষণ বিচারক বলেন বা
বলে থাকেন| তাহলে নিম্ন আদালতের রায়
যখন উচ্চ আদালত বাতিল
করে দেয় তখন কি
নিম্ন আদালতের অবমাননা হয় না ? , না
কি বিচারকরা আদালত অবমাননা আইনের
উর্ধে ? যাহোক যারা আইনের
মানুষ তারা হয়ত ভালো
জানেন|
ছয়.
দেশে উন্নয়ন হইনি
আমি বলবনা , দেশের মানুষ অনেক
দিক দিয়ে উন্নতি লাভ
করেছে ,প্রচুর অবকাঠামো নির্মান
হয়েছে , আগে হলি উডের সিনেমা গুলোতে
দেখতাম ফ্লাই
ওভার এর উপর দিয়ে
গাড়ি গুলো যাচ্ছে ,ভালো
লাগত, স্বপ্ন দেখতাম; এখন বাংলাদেশেও অনেকগুলো
ফ্লাই ওভার, মোটরসাইকেল
চালায় যাই আর গাড়িতে
যাই ,অনেক তৃপ্ত লাগে
যে আমরা উন্নতি করছি
দিনে দিনে , কয়েকটি দেশের
মানুষদের সাথে কাজ করে
আমার মনে হয়েছে আমাদের দেশের
মানুষের মেধা পৃথিবীর কোনো দেশের
মানুষদের চেয়ে কম এটা
আমি মানি না , আমাদের
শুধু মেধার প্রকাশ ঘটাবার
সুযোগ কম , মেধা বিকাশের
সুযোগ কম |আজকে সারা
বিশ্বের মানুষের কাজ করে দিয়ে
প্রচুর টাকা ইনকাম করছি
আমরা , এগুলোর মধ্য শুধু
পোশাকেই নয় জাহাজও বানাচ্ছে আমাদের মানুষ , পৃথিবীর
অনেক দেশে আমাদের তৈরী
মোবাইল আপস ব্যবহার করছে
,সুযোগ পেলে বাংলাদেশের মানুষ
সবই বানাতে পারবে | আর
আমাদের আছে মনোবল ও
সাহস দুটোই, আমরা দেশের
টাকায় পদ্মা সেতু তৈরী
করার সাহস দেখিয়েছি |
এত কিছুর পরেও দিনে
দিনে মানুষের মধ্য শ্রেণী বৈষম্য
বেড়ে যাচ্ছে যারা ধনী
তারা আরো ধনী হচ্ছে
আর গরিব সে তার খরচের
তাড়নায় অনিশ্চিত জীবনের ঝুকি নিয়ে
বিদেশ পাড়ি
দিচ্ছে কোনো রকম কুলি
মজুরের জীবন প্রত্যাশায়
| শুধু যে গরিব যাচ্ছে
তা নয় আমাদের দেশের
মেধাবীরা সুযোগের অভাবে মেধা পাচারের
শিকার হচ্ছে | তাদের প্রতি আমাদের
মিনতি তোমারা ছাড়া এই
দেশটার হাল কে
ধরবে, তোমরা থেকে যাও
, এই সমাজের উন্নয়ন তোমাকে
ছাড়া হবে না, অনেক দিন আগে
একটা লেখা পড়েছিলাম তাতে
লেখা ছিল যে ১৯৭২/১৯৭৪ সালে সেখ
মুজিব সিঙ্গাপুর ও মালেশিয়া কে
আর্থিক সাহায্য দিয়েছিল এবং তখন তাদের
অবস্তা এতটাই নাজুক ছিল
| আর এখন অনেক টাকা খরচ
করে আমরা
তাদের দেশে যাই কুলি মজুর হতে
|
আমাদের চিন্তা চেতনায়
অন্যকে দোষ দিয়া আমাদের
সহজাত প্রবৃত্তি, দায়টা সমাজের ,দায়
টা সরকারের, দায় আমাদের সকলের
,কুকুরের সুকনা
হাড্ডি চেটে রক্তের সাধ
নিয়ার মত করে আমরা
যে অনৈতিক কাজের মাধমে
জাগতিক সুখের সাধ নিতে
চেষ্টা করতেছি আসলে আমরা
ওই কুকুরের নিজের গাল কেটে রক্তের
সাধ নেওয়ার
মত আমরাও আমদের ক্ষতি
করতেছি. এটা যত তাড়াতাড়ি
বুঝতে পারব ততই মঙ্গল |
রাহাদ
রহমান
সিনিয়র
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
লরেল@হাউস
ঢাকা,
বাংলাদেশ
১৭.০৬.২০১৫
No comments:
Post a Comment